| |
               

মূল পাতা জাতীয় সবখানেই যেন টাকাওয়ালাদের জয় জয়কার : রাষ্ট্রপতি 


সবখানেই যেন টাকাওয়ালাদের জয় জয়কার : রাষ্ট্রপতি 


রহমত নিউজ ডেস্ক     09 December, 2022     08:03 PM    


রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, দুর্নীতি বাংলাদেশের নয়, এটা বৈশ্বিক সমস্যা। দুর্নীতি সমাজে বৈষম্য তৈরি করে। বিকাশ ও উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করে। আমি মনে করি মানুষের মধ্যে দুর্নীতি বিষয়ক সচেতনতা তৈরি ও দুর্নীতিগ্রস্তদের শাস্তি নিশ্চিত করার মাধ্যমে দুর্নীতি কমিয়ে আনা সম্ভব। তাই সামাজিক আন্দোলনের বিকল্প নেই। একটা সময় ছিল ঘুষখোর, সুদখোর ও দুর্নীতিবাজদের সামাজিক গ্রহনযোগ্যতা ছিল না বললেই চলে। কিন্তু কালের বিবর্তনে সেই মূল্যবোধ হারিয়ে যেতে বসেছে। এখন শহর, নগর ও গ্রামসহ সবখানেই যেন টাকাওয়ালাদের জয় জয়কার। টাকা কিভাবে এল, সৎ পথে নাকি অসৎপথে এসব নিয়ে কারও মাথাব্যাথা নেই। সামাজিক মর্যাদার মাপকাঠি হয়েছে যেন টাকা। তাই রাজনীতিবিদ চাকরিজীবী, পেশাজীবী, কৃষক ও শ্রমিকরা সবাই যেন টাকার পিছনে দৌড়াচ্ছে। টাকা কিভাবে আসল সৎ পথে নাকি অসৎ পথে এসব নিয়ে ভাবনার ফুসরত নেই।

আজ (৯ ডিসেম্বর) শুক্রবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস উপলক্ষে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে তাঁর রেকর্ডকৃত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতির রেকর্ড করা বক্তব্য শুনানো হয়। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। সভায় সভাপতিত্ব করেন দুদক চেয়ারমান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ।

রাষ্ট্রপতি বলেন, দুর্নীতি দমনে দুদকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতা অবলম্বন করতে হবে। সর্ষের ভেতর ভূত যেন না থাকে, তাহলে দুদক জনগণের কাছে আস্থা হারাবে। দুর্নীতিবাজকে সহায়তা করাও দুর্নীতি। দুর্নীতি শুধু বাংলাদেশের নয়- এটি একটি বৈশ্বিক সমস্যা। দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধ সামাজিক আন্দালন গড়ে তোলার বিকল্প নেই। বাংলাদেশ সব সময় দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিল। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের শূন্য সহিষ্ণুতা বাস্তবায়ন দেশের সমৃদ্ধি এনে দিবে। দুর্নীতিবাজকে সহায়তা করাও দুর্নীতি। দুর্নীতি দূর করতে হলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসতে হবে। ছোট ও বড় সকল দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে একই ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। দুর্নীতি করলে শাস্তি পেতে হয় সমাজে এটা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। দুর্নীতি দমনে দুদকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতা অবলম্বন করতে হবে। সর্ষের ভেতর ভূত যেন না থাকে তাহলে দুদক জনগণের কাছে আস্থা হারাবে।

এর আগে সকালে বেলুন উড়িয়ে ২০তম আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস উদ্বোধন করা হয়। এরপর রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় মানববন্ধন হয়। মানববন্ধনে দুদক কমিশনার (অনুসন্ধান) মো. মোজাম্মেল হক খান, কমিশনার (তদন্ত) জহুরুল হক, দুদক সচিব মো মাহবুব হোসেন এবং কমিশনের মহাপরিচালক ও আইনজীবিসহ সকল স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশ নেন। এবার ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ বিশ্ব’ প্রতিপাদ্যে দিবসটি উপলক্ষে নতুন সাজে সেজেছে দুদক। দুদকের প্রধান কার্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে শুরু করে অফিস ভবন, দুদকের মিডিয়া সেন্টার ও অফিসের পিছনের গেটজুড়ে দুর্নীতি বিরোধী ব্যানার ও ফেস্টুন দিয়ে সাজানো হয়েছে। আজ রাজধানী ঢাকাসহ দেশের ৮টি বিভাগ, ৬৪টি জেলা এবং ৪৯৫টি উপজেলায় বড় পরিসরে উদযাপন হচ্ছে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস। একই সাথে দেশে সব সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদ, সরকারি-আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং পিকেএসএফসহ অন্যান্য এনজিওতে দুর্নীতি বিরোধী বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

জাতিসংঘ ২০০৩ সালের ৯ ডিসেম্বরকে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। সে হিসেবে এবার হচ্ছে ২০তম আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস। জাতিসংঘ সারা বিশ্বকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ করার লক্ষ্যেই ইউনাইটেড ন্যাশনস কনভেনশন অ্যাগেইনেস্ট করাপশনের (আনকাক) মাধ্যমে দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বাংলাদেশ আনকাকের সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ২০০৭ সাল থেকে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস পালন শুরু করে। যদিও সরকারিভাবে ২০১৭ সাল থেকে দিবসটি উদযাপিত হয়।